৬.১৪ মধ্যমপন্থা ও সমঝোতা
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেনঃ
وَكَذَلِكَ
جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا لِتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُونَ الرَّسُولُ
عَلَيْكُمْ شَهِيدًا
‘এমনিভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যমপন্থী সম্প্রদায় করেছি - যাতে করে তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলির জন্যে এবং যাতে রাসূল সাক্ষ্যদাতা হন তোমাদের জন্যে।’ [সূরা আল-বাকারাহঃ ১৪৩]
রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ
خَيْرُ
الأمُورِ أوْسَطُهَا
‘সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হলো মধ্যমপন্থা।’ [দাররুল মানছুর-এ ইমাম সুয়ূতী ইবনে আবি শাইবার বর্ণনা হতে, শু’য়াব আল মুরসালা লিল বায়হাকী]
উল্লিখিত আয়াত ও হাদীসের ভিত্তিতে অনেকে দাবি করেন আমাদেরকে মধ্যমপন্থী হতে হবে এবং এটার জন্য প্রয়োজনে ইসলামবিরোধী শক্তিগুলোর সঙ্গে আপোস সমঝোতায় যাওয়া যেতে পারে। এই যুক্তি ব্যবহার করে তারা গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র, সামরিকতন্ত্র প্রভৃতি কুফর আদর্শের সাথে মিলে মিশে গিয়েছেন।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই আয়াত ও হাদীসে ব্যবহৃত ওয়াসাতান (وَسَطاً) শব্দের সঙ্গে আপোস সমঝোতার কোনো সম্পর্ক নেই। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ‘ওয়াসাত (وَسَط) শব্দের অর্থ হলো আদল (عَدْل) বা ন্যায়পরায়ণতা।’ [বুখারী, তিরমিযী, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ]
বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম আতা ইবনু খলীল আবু রাশতা তার তাইসির ফী উসুলিত-তাফসীর গ্রন্থে এই আয়াতের তাফসীরে বলেনঃ
(الوسط) في كَلامِ الْعَرَبِ
الْخِيَار وَخِيار مِن الناسِ عُدُوْلُهُمْ
‘আরবদের ভাষায় الوسط শব্দের অর্থ উত্তম এবং মানুষের মধ্যে উত্তম হলো তাদের ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিরা।’
তাফসীরে ইবনে কাসীরে বর্ণিত আছে, ইমাম আহমদ বলেনঃ
“রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’য়ালা নুহ (আ) ডেকে জিজ্ঞেস করবেনঃ ‘তুমি কি বাণী পৌঁছিয়েছ?’’ উত্তরে তিনি বলবেনঃ ‘হ্যাঁ।’ তখন তার সম্প্রদায়কে ডেকে জিজ্ঞেস করা হবেঃ ‘তোমাদের কাছে কি বাণী পৌঁছানো হয়েছে?’ তারা বলবেঃ ‘আমাদের কাছে কোনো সতর্ককারী বা অন্য কেউ আসেনি।’ তখন নুহ (আ)-কে জিজ্ঞেস করা হবেঃ ‘তোমার সাক্ষী কে?’ উত্তরে তিনি বলবেনঃ ‘মুহাম্মদ ও তার উম্মত।’ রাসূল (সাঃ) বলেনঃ
( وَكَذَلِكَ جَعَلْنَاكُمْ
أُمَّةً وَسَطًا ) আয়াতাংশের এটাই তাৎপর্য।”
সুতরাং এই আয়াত ও হাদীস আমাদেরকে ন্যায়পরায়ণতা (عَدْل) শিক্ষা দেয়। কোনো হারাম মতবাদকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করার তথাকথিত সমঝোতা বা মধ্যমপন্থা এই আয়াত ও হাদীসের শিক্ষা নয়। প্রকৃতপ্রক্ষে এই ন্যায়পরায়ণতার কারণেই কিয়ামতের দিন উম্মতে মুহাম্মদিয়া অন্য উম্মতের কাজের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেবে।
কোনো হারাম মতবাদকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা হারাম। পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র, একনায়কতন্ত্র, সামরিকতন্ত্র প্রভৃতি কুফর ব্যবস্থার সাথে ইসলামের কোনো সমঝোতা হতে পারে না। মক্কার কাফিররা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে তাদের সাথে সমঝোতার প্রস্তাব দিলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর চাচা আবু তালিবকে বলেনঃ
يَا
عَمّ، وَاَللّهِ لَوْ وَضَعُوا الشّمْسَ فِي يَمِينِي ، وَالْقَمَرَ فِي يَسَارِي عَلَى
أَنْ أَتْرُكَ هَذَا الْأَمْرَ حَتّى يُظْهِرَهُ اللّهُ أَوْ أَهْلِكَ فِيهِ مَا تَرَكْتُهُ
‘হে চাচা, আল্লাহর শপথ, তারা যদি আমার ডান হাতে সূর্য ও বাম হাতে চাঁদও এনে দেয় এই শর্তে যে আমি আমার কাজ পরিত্যাগ করবো, তাহলেও আমি কখনো আমার কাজ বন্ধ করবো না, যতক্ষণ না আল্লাহ এটিকে বিজয়ী করেন অথবা আমি ধ্বংস হয়ে যাই।’
[সীরাতে ইবনে হিশাম]
গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, নারী নেতৃত্বের মতো সুস্পষ্ট হারাম বিষয়গুলোতে যারা ওইসব মুফাসসির,
শায়খ, আল্লামা, মুফতি, মাওলানাদের ওপর নির্ভর করছেন, আল্লাহ তাদের হিদায়াত নসীব করুন। আল্লাহ তাদেরকে সেই দলভুক্ত করুন যে দলটি সবসময় হকের উপর থাকবে।
ইমাম মুসলিম মুয়াবিয়া (রাঃ)-কে উদ্ধৃত করে বলেনঃ
আমি রাসূল (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি,
لَا
تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي قَائِمَةً بِأَمْرِ اللَّهِ لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ
خَذَلَهُمْ أَوْ خَالَفَهُمْ حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللَّهِ وَهُمْ ظَاهِرُونَ عَلَى
النَّاسِ
‘আমার উম্মত থেকে একটি দল আল্লাহর আদেশের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। যারা তাদের ত্যাগ করবে বা তাদের বিরুদ্ধাচরণ করবে তারা তাদের কোনো ক্ষতিই করতে পারবে না; যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহর আদেশ আসে এবং তারা মানুষের উপর বিজয়ী হয়।’
ইমাম বুখারী ও ইমাম আহমদ তার মুসনাদে আরো উল্লেখ করেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ
لَا
يَزَالُ مِنْ أُمَّتِي أُمَّةٌ قَائِمَةٌ بِأَمْرِ اللَّهِ لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ
وَلَا مَنْ خَالَفَهُمْ حَتَّى يَأْتِيَهُمْ أَمْرُ اللَّهِ وَهُمْ عَلَى ذَلِكَ
‘আমার উম্মতের মাঝে একটি দল আল্লাহর আদেশের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে, যারা তাদেরকে ত্যাগ করবে বা তাদের বিরোধিতা করবে তারা তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না; যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহর আদেশ আসে এবং তারা তাতে অবিচল থাকে।’
মু’আয ইবনে জাবাল (রাঃ) বলেনঃ
وَهُمْ
بِالشَّأْمِ তারা আছে আল-শামে।’
ইমাম আহমদ ও তাবারানী নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীদের মাধ্যমে আবু উমামা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, রাসূল (সাঃ) বলেনঃ
لَا
تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي عَلَى الْحَقِّ ظَاهِرِينَ لعَدُوِّهِمْ قَاهِرِينَ
لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَالَفَهُمْ إِلَّا مَا أَصَابَهُمْ مِنْ لَأْوَاءَ حَتَّى يَأْتِيَهُمْ
أَمْرُ اللَّهِ وَهُمْ كَذَلِكَ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَأَيْنَ هُمْ قَالَ بِبَيْتِ
الْمَقْدِسِ وَأَكْنَافِ بَيْتِ الْمَقْدِسِ
“আমার উম্মতের মাঝে একটি দল হবে যারা সত্যের উপর অবিচল থাকবে বিজয়ী বেশে, শত্রুদের পরাভূত করবে। তাদের বিরুদ্ধাচরণকারীরা তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। শুধুমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষাই তারা মোকাবেলা করবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহর আদেশ আসে এবং তারা অবিচল থাকে। বর্ণনাকারীরা রাসূল (সাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ‘হে রাসূলুল্লাহ, তারা কোথায়?’ তিনি (সাঃ) বললেনঃ ‘তারা বায়তুল মাকদিস ও তার সংলগ্ন অঞ্চলে।’”
ইবনে মাজাহ তার সুনানে আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল (সাঃ) বলেনঃ
لَا تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ
أُمَّتِي قَوَّامَةً عَلَى أَمْرِ اللَّهِ لَا يَضُرُّهَا مَنْ خَالَفَهَا
‘আমার উম্মতের মাঝ থেকে একটি দল হবে আল্লাহর আদেশের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং তাদের বিরোধীরা তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’
ইমাম আল হাকিম তাঁর মুসতাদরাক গ্রন্থে বিশ্বস্ত সনদের মাধ্যমে উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণনা করেনঃ
لَا
تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي ظَاهِرِيْنَ عَلَى الْحَقِّ حَتَّى تَقُوْم السَّاعَة
‘আমার উম্মতের মাঝ থেকে একটি দল হবে যারা সত্যের উপর বিজয়ী বেশে থাকবে, যতক্ষণ না কিয়ামত আসে।’
ইমাম আহমদ তার মুসনাদে এবং আবু দাউদ তার সুনান গ্রন্থে সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণনা করেনঃ
لَا
تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي عَلَى الْحَقِّ ظَاهِرِينَ لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ
حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ
‘আমার উম্মতের মধ্যে একটি দল থাকবে যারা হক পথে থাকবে, বিজয়ী থাকবে এবং যারা তাদের বিরোধিতা করবে তারা তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল-এর আদেশ এসে পৌঁছায়।’
ইমাম আহমদ, মুসলিম, তিরমিযী আরেক বর্ণনায় আরো বলেনঃ
‘যারা তাদের পরিত্যাগ করবে, তারা তাদের কোনো ক্ষতিই করতে পারবে না।’
আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দাওয়াহকারী দলটির সম্মান প্রসঙ্গে আবু দাউদ শরীফে বর্ণিত আছে, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ
إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ
لَأُنَاسًا مَا هُمْ بِأَنْبِيَاءَ وَلَا شُهَدَاءَ يَغْبِطُهُمْ الْأَنْبِيَاءُ وَالشُّهَدَاءُ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِمَكَانِهِمْ مِنْ اللَّهِ تَعَالَى قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ
تُخْبِرُنَا مَنْ هُمْ قَالَ هُمْ قَوْمٌ تَحَابُّوا بِرُوحِ اللَّهِ عَلَى غَيْرِ
أَرْحَامٍ بَيْنَهُمْ وَلَا أَمْوَالٍ يَتَعَاطَوْنَهَا فَوَاللَّهِ إِنَّ وُجُوهَهُمْ
لَنُورٌ وَإِنَّهُمْ عَلَى نُورٍ لَا يَخَافُونَ إِذَا خَافَ النَّاسُ وَلَا يَحْزَنُونَ
إِذَا حَزِنَ النَّاسُ وَقَرَأَ هَذِهِ الْآيَةَ
] أَلَا إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللَّهِ لَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ
[
“আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এমন কিছু ব্যক্তি আছে যারা নবীও না, শহীদও না - তবুও শহীদ ও নবীগণ কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলার নিকট ওই বান্দাদের মর্যাদার কারণে তাদেরকে ঈর্ষা করবেন (মর্যাদার স্বীকৃতি দেবেন)। তারা জিজ্ঞেস করলোঃ ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমাদেরকে বলুন, তারা কারা?’ তিনি (সাঃ) জবাব দিলেনঃ ‘তারা এমন লোক যারা একে অপরকে আল্লাহর রূহের জন্য ভালোবাসবে, যদিও তাদের মধ্যে কোনো আত্মীয়তার বন্ধন বা সম্পদের লেনদেন নেই। আল্লাহর শপথ, তাদের চেহারায় থাকবে নূর এবং তারা থাকবে নূরের উপর। মানুষ যখন ভীত থাকবে, তখন তাদের কোনো ভীতি থাকবে না এবং মানুষ যখন দুঃখে থাকবে তখন তাদের কোনো দুঃখ থাকবে না।’ তারপর তিনি এই আয়াত পড়লেনঃ ‘মনে রেখো, যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের না কোনো ভয়-ভীতি আছে, না তারা দুঃখ পাবে।’
[সূরা ইউনুসঃ ৬২]”
আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ)-কে প্রশ্ন করা হয় যে, ‘এই আয়াতে আল্লাহর বন্ধু বলতে কাদেরকে বুঝানো হয়েছে?’ তিনি (সাঃ) বললেনঃ ‘সেসব লোককে যারা একান্তভাবে আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিজেদের মধ্যে ভালোবাসা পোষণ করে, কোনো পার্থিব উদ্দেশ্য এর মধ্যে থাকে না।’ [তাফসীরে মাযহারী]
রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ ‘আমার মর্যাদার খাতিরে যারা পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা স্থাপন করে, তাদের জন্য (পরকালে) নূরের এমন সুউচ্চ মিনার হবে যে, তাদের জন্য নবী এবং শহীদগণও ঈর্ষা করবেন।’ [তিরমিযী]
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ
إِنَّ
الإِسْلامَ بَدَأَ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ غَرِيبًا كَمَا بَدَأَ، فَطُوبَى لِلْغُرَبَاءِ،
قَالُوا: وَمَا هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ:الَّذِينَ يُصْلِحُونَ عِنْدَ فَسَادِ
النَّاسِ
“ইসলাম অপরিচিত অবস্থায় শুরু হয়েছিল। অচিরেই তা আবার অপরিচিত অবস্থায় ফিরে আসবে - যেভাবে শুরু হয়েছিল। সুতরাং অপরিচিতদের জন্য সুসংবাদ। তাকে জিজ্ঞেস করা হলোঃ ‘তারা কারা ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ)?’ তিনি (সাঃ) বললেনঃ ‘যারা মানুষ খারাপ হয়ে গেলে তাদেরকে ঠিক করবে।’” [মু’জাম আল আওসাত -
তাবারানী]
তিরমিযীর আরেক বর্ণনায় রয়েছে,
الَّذِينَ
يُصْلِحُونَ مَا أَفْسَدَ النَّاسُ مِنْ بَعْدِي مِنْ سُنَّتِي
‘(তারা হচ্ছে ওরা) যারা আমার পরে মানুষ আমার সুন্নাহকে নষ্ট করে দিলে তা ঠিক করবে।’
অন্য এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ
يَأْتِي اللَّهَ قَوْمٌ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ نُورُهُمْ كَنُورِ الشَّمْسِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ أَنَحْنُ هُمْ يَا
رَسُولَ اللَّهِ قَالَ لَا وَلَكُمْ خَيْرٌ كَثِيرٌ وَلَكِنَّهُمْ الْفُقَرَاءُ وَالْمُهَاجِرُونَ
الَّذِينَ يُحْشَرُونَ مِنْ أَقْطَارِ الْأَرْضِ وَقَالَ طُوبَى لِلْغُرَبَاءِ طُوبَى
لِلْغُرَبَاءِ طُوبَى لِلْغُرَبَاءِ فَقِيلَ مَنْ الْغُرَبَاءُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
قَالَ نَاسٌ صَالِحُونَ فِي نَاسِ سَوْءٍ كَثِيرٍ مَنْ يَعْصِيهِمْ أَكْثَرُ مِمَّنْ
يُطِيعُهُمْ
“শেষ বিচারের দিন আল্লাহ এমন কিছু লোককে উপস্থিত করবেন যাদের নূর হবে সূর্যের মতো। আবু বকর (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ ‘তারা কি আমরা, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ)?’ তিনি বললেনঃ ‘না, তোমাদের জন্য বিশাল কল্যাণ রয়েছে বরং তারা হচ্ছে কিছু সংখ্যক দরিদ্র দেশত্যাগী, যারা উত্থিত হবে পৃথিবীর সব অঞ্চল থেকে।’ তারপর তিনি (সাঃ) বললেনঃ ‘কল্যাণ হোক অপরিচিতদের (তিনবার)।’ জিজ্ঞেস করা হলোঃ ‘কারা সেই অপরিচিতরা?’ তিনি (সাঃ) বললেনঃ ‘তারা হবে অনেক খারাপ লোকের মাঝে অল্পসংখ্যক সৎ লোক। তাদের মান্যকারীর চেয়ে তাদের অমান্যকারীদের সংখ্যা বেশি হবে।’” [মুসনাদে আহমদ, মু’জাম আল আওসাত -
তাবারানী]
তিনি (সাঃ) আরো বলেনঃ
فَإِنَّ مِنْ وَرَائِكُمْ
أَيَّامَ الصَّبْرِ الصَّبْرُ فِيهِ مِثْلُ قَبْضٍ عَلَى الْجَمْرِ لِلْعَامِلِ فِيهِمْ
مِثْلُ أَجْرِ خَمْسِينَ رَجُلًا يَعْمَلُونَ مِثْلَ عَمَلِهِ وَزَادَنِي غَيْرُهُ
قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَجْرُ خَمْسِينَ مِنْهُمْ قَالَ أَجْرُ خَمْسِينَ مِنْكُمْ
“নিশ্চয়ই তোমাদের (সাহাবীদের) পর ধৈর্যের দিন আসবে, সে সময়ে কারো ধৈর্য ধরা জ্বলন্ত কয়লা আঁকড়ে ধরার সমতুল্য হবে। আর তার প্রতিদান হবে পঞ্চাশ জনের প্রতিদানের সমান। তখন একজন সাহাবী (রাঃ) প্রশ্ন করলেনঃ ‘হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তাদের থেকেই পঞ্চাশ (জনের সমান)?’ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ ‘না বরং তোমাদের মধ্যে থেকে পঞ্চাশ (জনের সমান)।’” [তিরমিযী, আবু দাউদ]
No comments:
Post a Comment