সঠিক বন্ধনের ভিত্তি
একটি দাওয়াহকারী দলে আমাদের যোগ দেয়ার একমাত্র কারণ ঈমান।
এখন বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে, এই দলের সদস্যদের মধ্যকার বন্ধনটি কীসের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে? এর উত্তর হচ্ছে, এই দলের সদস্যদের বন্ধনের একমাত্র ভিত্তিও ঈমান।
হাদীস শরীফে আছে, “কিয়ামতের দিন যে সাত ধরনের ব্যক্তি আল্লাহর আরশের নিচে ছায়া পাবে, তাদের মধ্যে এক ধরনের ব্যক্তি হচ্ছে তারা, যারা পরস্পরকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালোবাসে।” [বুখারী ও মুসলিম]
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ)
বলেছেনঃ “কিয়ামতের দিন আল্লাহ
তা’আলা বলবেনঃ ‘আমার সুমহান ইজ্জতের খাতিরে যারা পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা স্থাপন করেছে তারা কোথায়? আজ আমি তাদেরকে আমার বিশেষ ছায়ায় স্থান দিব। আজ এমন দিন, আমার ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া নেই।’” [মুসলিম]
রাসূল (সাঃ) আবদুল্লাহ ইবনে মাস’উদকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ
“‘তুমি কি জানো ঈমানের কোন বন্ধন সবচেয়ে শক্তিশালী?’ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেনঃ ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ) ভালো জানেন।’ রাসূল (সাঃ) বললেনঃ ‘সবচেয়ে শক্তিশালী ঈমান হচ্ছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে আনুগত্য করা, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালোবাসা ও আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঘৃণা করা।’” [মুসতাদরাক-ই-হাকিম]
সুতরাং, ঈমানই হলো দাওয়াহকারীদের মধ্যকার বন্ধন। দাওয়াহকারী দলের মধ্যে ঈমানের পরিবেশ (Atmosphere of Iman) টিকিয়ে রাখা তাই একান্ত অপরিহার্য।
যেসব কারন দাওয়াহকারীদের ঈমানের বন্ধনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারেঃ
১. দাওয়াহ-র প্রতি নিষ্ঠাহীনতা
২. নিরর্থক কথাবার্তা
৩. ক্রোধ
৪.
অহংকার/বড়ত্ব
৫.
কাজকে বস্তুগতভাবে দেখা
৬. দলীয় নেতৃত্ব ও পরিচালনায় দুর্বলতা
দাওয়াকারী দলের কোনো সদস্য যদি তার নির্ধারিত কাজটি সঠিক গুরুত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন না করে,
তাহলে এতে অন্যরা বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ হতে পারে। যদিও এই বিরক্তি ও ক্ষোভের প্রকাশ অবশ্যই সংযত হওয়া উচিত; কিন্তু মূলত এই বিরক্তি ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে কোনো সদস্যের নিষ্ঠাহীনতার কারণে। আল্লাহর দাওয়াহ
বহনকারীর
জন্য নিষ্ঠাহীনতা কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
নিরর্থক
কথাবার্তা
বলা মু’মিনের বৈশিষ্ট্য নয়।
আল্লাহ বলেনঃ
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ
الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ
مُعْرِضُونَ
‘মু’মিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে যারা নিজেদের নামাযে বিনীত-নম্র, যারা অনর্থক কথাবার্তায় নির্লিপ্ত...’ [সূরা
মু’মিনুনঃ ১-৩]
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেনঃ
‘বান্দা কখনো কখনো এমন কথা বলে যাতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি রয়েছে, অথচ সে ওই কথার অনিষ্টতা জানে না, কিন্তু ওই কথায় তাকে জাহান্নামের এতটা গভীরে নিক্ষেপ করে, যতটা দূরত্ব রয়েছে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে।’ [বুখারী ও মুসলিম]
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেনঃ
‘কোনো বান্দা এমন একটি কথা উচ্চারণ করে, আর তা শুধু লোকজনকে হাসানোর উদ্দেশ্যেই বলে। এই কথার দরুন সে (জাহান্নামের মধ্যে) এতটা দূরে নিক্ষিপ্ত হবে যতটা দূরত্ব রয়েছে আসমান ও জমিনের মধ্যে। বস্তুতঃ বান্দার পায়ের পিছলানো থেকে তার মুখের পিছলানো অধিক হয়ে থাকে।’ [বায়হাকী]
রাসূল (সাঃ) বলেনঃ ‘মানুষ যখন অনর্থক বিষয়গুলো ত্যাগ করে তখন তার ইসলাম সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়ে ওঠে।’ [তিরমিযী, মুয়াত্তা, মুসনাদে আহমদ, ইবনে মাযাহ
ও বায়হাকী]
ক্রোধ দাওয়াহকারীদের মধ্যে ঈমানের বন্ধনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। রাসূল (সাঃ) বলেনঃ
‘ক্রোধ ঈমানকে এমনভাবে নষ্ট করে যেভাবে মুসাব্বির মধুকে নষ্ট করে।’ [বায়হাকী]
অপর হাদীসে আছে, ‘ক্রোধ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে...’ [আবু দাউদ]
অহংকার/বড়ত্বঃ নেতাকর্মীদের মধ্যে নিজেকে বড় ভাবার, নিজের চিন্তাকে সবসময় শ্রেষ্ঠ মনে করা প্রবনতা থাকলে,
তা ঈমানের বন্ধনকে ধ্বংস করে দেয়। এ ধরনের অসুস্থ মানসিকতার কারনে পারস্পরিক পরামর্শ করার প্রবনতাও কমে যায়। নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার বিকার তৈরী হয়।
রাসূল (সাঃ)
বলেনঃ ‘কোন ব্যক্তির খারাপ হওয়ার জন্য এটুকুই যথেষ্ট যে, সে অপর মুসলিম ভাইকে অবজ্ঞার চোখে দেখবে।’ [মুসলিম]
কাজকে বস্তুগতভাবে দেখাঃ
নেতাকর্মীরা
একে অপরের কাজে সাহায্য করার ক্ষেত্রে কাজকে আধ্যাত্নিকতার
(Spiritual value)
দিক দিয়ে মূল্যায়ন না করে বস্তুগতভাবে মূল্যায়ন (Material value) করলে ক্রমান্বয়ে তা পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। একজনের দায়িত্ব আরেকজন কোন কারন
বশতঃ পালন করাটাকেও বোঝা (Burden) মনে হয়। এ ধরনের চিন্তার ফলে কোন কাজের সওয়াবের চেয়ে কাজটির বস্তুগত কষ্ট/শ্রমই বেশি বিবেচনায় চলে আসে।
সদস্যদের দলকে নেতৃত্বদান ও পরিচালনার দুর্বলতা দলের ঈমানের বন্ধনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। দলের মধ্যে অহেতুক উঁচু-নিচু শ্রেণীভেদ প্রকাশ ঘটানো হয়। অথচ রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ
‘তোমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককেই তার দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ [বুখারী ও মুসলিম]
ঈমানের বন্ধন সুদৃঢ় রাখার উপায়ঃ
১. নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা। দাওয়াহ-র
ছোট-বড় প্রত্যেকটি কাজকে রাসূল (সাঃ) এর দাফন
কাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ মনে করতে হবে।
২. অর্থহীন কথাবার্তা থেকে দূরে থাকতে হবে। দল থেকে বিতরণ করে দেয়া বই-নিবন্ধ-বক্তব্যগুলো ভালোভাবে পড়ে সেগুলো নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করলে অর্থহীন কথা বলার
সুযোগ থাকবে না। মানুষের সাথে হাসিমুখে কথা বলা সুন্নত। যেমনঃ
আবদুল্লাহ ইবনে হারেস (রা.) বলেনঃ
‘আমি রাসূল (সাঃ) অপেক্ষা অধিক মুচকি হাসতে কাউকে দেখিনি।’ [তিরমিযী]
কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত হাসাহাসি, ঠাট্টা-মশকরা দাওয়াহকারীর ব্যক্তিত্বকে খেলো করে তোলে। বিশেষত, অট্রহাসি সুন্নতের পরিপন্থি।
আয়েশা (রা.) বলেনঃ ‘আমি কখনো রাসূল (সাঃ) কে এমনভাবে হাসতে দেখিনি যে, মুখভরা হাসিতে তার পবিত্র মুখের অভ্যন্তরীন অংশ (কন্ঠতালু) দেখতে পাই। বরং তিনি মুচকি হাসিতেই অভ্যস্থ ছিলেন।’ [বুখারী, মুসলিম]
কিছু সাহাবীকে হাসাহাসিতে লিপ্ত দেখে রাসূল (সাঃ) বলেছিলেনঃ
‘সেই মহান সত্তার শপথ! আমি যা জানি, যদি তোমরা তা জানতে, তাহলে তোমরা কাঁদতে বেশি এবং হাসতে কম।’ [বুখারী]
সুতরাং, দাওয়াহকারীদের উচিত নিরর্থক হাসাহাসি পরিহার করে সুযোগ পেলেই কনসেপ্ট নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করা, এমন আলোচনা করা যা পরকালের পাথেয় হবে।
রাসূল (সাঃ)
আমাদেরকে
হুঁশিয়ার
করেছেনঃ ‘দুটি নিয়ামতের ব্যাপারে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ
-স্বাস্থ্য ও অবসর সময়।’ [বুখারী]
৩. ইসলামী শিষ্ঠাচার পালনঃ
দাওয়াহকারীদের
নিজেদের
মধ্যে সুন্নাহ এর আলোকে শিষ্টাচার অনুশীলন করলে তা পারস্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধি করবে। যেমনঃ
মুসাহাফা, বিপদে সাহায্য করা, অসুস্থকে দেখতে যাওয়া ও সর্বোপরি সালাম বিনিময় করা।
রাসূল (সাঃ) বলেনঃ
‘তোমরা ঈমান না আনা পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর পরস্পরকে ভালো না বাসলে তোমাদের ঈমানের পূর্ণতা লাভ করবে না। আমি কি তোমাদের এমন কোন কাজের কথা বলব না, যা করলে তোমাদের ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে? তা হচ্ছে, তোমরা নিজেদের মধ্যে ব্যাপকভাবে সালামের প্রচলন কর।’ [মুসলিম]
৪. ক্রোধকে শয়তানের বন্ধু ও নিজের শত্রু
মনে করাঃ
আল্লাহ বলেনঃ
الَّذِينَ
يُنفِقُونَ فِي السَّرَّاءِ وَالضَّرَّاءِ وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ
وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ ۗ وَاللَّهُ
يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
‘তাদের বৈশিষ্ট্য হলো, তারা রাগকে হজম করে এবং মানুষের সঙ্গে ক্ষমার নীতি অবলম্বন করে চলে। আল্লাহ এ ধরনের মুহসীন তথা সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।’ [সূরা আল-ইমরানঃ ১৩৪]
হযরত আলী (রাঃ)-এর উপদেশঃ
“অহঙ্কারের প্রতি দুর্বলতা, ক্রোধ ও ঔদ্ধত্য প্রবণতার উপর কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ কর।”
কোন দাওয়াহকারী তার অপর কোন দাওয়াহকারী ভাইয়ের আচরনে ক্ষুদ্ধ
হলে তার সাথে
ব্যক্তিগতভাবে
বিষয়টি নিয়ে সম্ভ্রমের সাথে নসীহত করবে। কোন অবস্থাতেই নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বন্ধ রাখা বা এড়িয়ে চলা যাবে না। রাসূল (সাঃ) এর নির্দেশঃ
‘কোন ব্যক্তির জন্য হালাল নয় যে, তিনদিনের বেশি সে অপর মুসলিম ভাইকে ত্যাগ করবে, কোথাও পরস্পর দেখা হলে একজন একদিকে, অন্যজন আরেক দিকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। আর এই দু’জনের মধ্যে সেই উত্তম, যে প্রথমে সালাম করবে।’ [বুখারী,মুসলিম]
৫. আত্নম্ভরিতা ত্যাগঃ নিজেকে বড় ভাবার অসুস্থ
চিন্তা পরিহার করতে হবে। নিজেদের দুর্বলতাগুলো নিয়ে বরং বেশি ভাবতে হবে।
রাসূল (সাঃ) বলেনঃ
‘যে ব্যক্তির অন্তরে অনু পরিমান অহংকার আছে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।......অহংকার হলো সত্য ত্যাগ করা ও মানুষকে তুচ্ছ মনে করা।’ [মুসলিম]
গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে যোগ্য ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
রাসূল (সাঃ) এর নির্দেশঃ ‘যে ব্যক্তি কোন কাজের ইচ্ছা করে তাতে পরামর্শ গ্রহন করে, আল্লাহ তাকে সঠিক বিষয়ের দিকে হেদায়েত করবেন।’ [বায়হাকী]
কাউকে দাওয়াহর মাঠে নতুন ভেবে অবহেলা করা বা গুরুত্ব কম দেয়া উচিত নয়। রাসূল (সাঃ) মক্কা বিজয়ের পর বহু নামকরা ও বয়স্ক সাহাবী থাকা সত্ত্বেও আত্তাব ইবনে আসীদ নামে বিশ বছর বয়সী এক তরুনকে মক্কার গভর্নর নিয়োগ করেন। এক অখ্যাত তরুনের মধ্যে আল্লাহর নবী (সাঃ) আল্লাহর শহর মক্কায় আল্লাহর দ্বীনের অধীনে প্রথম গভর্নর হওয়ার যোগ্যতা খুঁজে নেন।
৬. যে কোন কাজকে আধ্যাত্নিক দিক থেকে মূল্যায়নঃ এক দাওয়াহকারী অপর কোন দাওয়াহকারী ভাইয়ের কাজে সহায়তা করার ক্ষেত্রে বা কারও অসম্পাদিত কাজ করে দেয়ার ক্ষেত্রে ওই কাজটির বস্তুগত শ্রম বা কষ্টকে বড় করে দেখা উচিত নয়। বরং কাজটি আধ্যাত্নিক দিক থেকে মূল্যায়ন করে সেটাকে সওয়াব অর্জনের মাধ্যম মনে করতে হবে।
রাসূল (সাঃ)
বলেনঃ ‘এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। সে তার উপর জুলুম করতে পারে না বা তাকে শত্রুর হাতে সোর্পদ করতে পারে না। যে ব্যক্তি কোন মুসলিম ভাইয়ের কোন প্রয়োজন পূরনে সচেষ্ট হয়, আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরন করে দেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের কোন কষ্ট দূর করে দেবে, বিনিময়ে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার কষ্ট দূর করে দিবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষ গোপন করে রাখবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ গোপন করে রাখবেন।’ [বুখারী, মুসলিম]
‘তোমাদের কেউই পূর্ণ মু’মিন হবে না, যতক্ষন না সে তার ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করবে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।’ [বুখারী, মুসলিম]
৭. নেতৃত্বের ব্যাপারে রাসূল (সাঃ) ও সাহাবীগণের দৃঢ়তা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতা দাওয়াহকারীদের জন্য সর্বকালীন আদর্শ। সে
ধরনের নেতৃত্ব দলের মধ্যে ঈমানের বন্ধনকে সুদৃঢ় করে। নেতৃত্বে ব্যর্থতা যে কোন আন্দোলনকে ব্যর্থ করে দিতে পারে। নেতৃত্বের গুণাবলী নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার সুযোগ এখানে নেই। তবে মনে রাখতে হবে, দায়িত্বশীলদের ওয়ান টু ওয়ান সময় দেয়া হলো ঈমানের বন্ধন দৃঢ় করার অত্যন্ত কার্যকরী মাধ্যম। আল্লাহর কাছে এ ধরনের সাক্ষাতের মর্যাদা বিশাল। রাসূল (সাঃ) বলেনঃ
“যখন কোনো ব্যক্তি তার ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে নিজের ঘর থেকে বের হয়, তখন তার পেছনে সত্তর হাজার ফেরেশতা থাকে। তারা সবাই তার জন্য দোয়া করে এবং বলেঃ ‘হে আমাদের রব, এই ব্যক্তি শুধুমাত্র তোমার সন্তুষ্টির জন্য (তার ভাইয়ের সঙ্গে) মিলিত হয়েছে। অতএব, তুমিও তাকে তোমার অনুগ্রহের অন্তর্ভুক্ত কর।’” [বায়হাকী]
সুতরাং, সর্বান্তকরণে ঈমানের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াই দাওয়াহ-র সঙ্গে টিকে থাকার একমাত্র পথ। ইনশা’আল্লাহ, আমরা তাদের অংশ হতে চাই যাদের সম্বন্ধে রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ
তা’আলা বলেনঃ ‘আমার মর্যাদার খাতিরে যারা পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা স্থাপন করে, তাদের জন্য (পরকালে) নূরের এমন সুউচ্চ মিনার হবে যে, তাদের জন্য নবী এবং শহীদগণও ঈর্ষা করবেন।’” [তিরমিযী]
No comments:
Post a Comment