16.7.14

ইসলামী রাষ্ট্রঃ আল-আহযাবের যুদ্ধ

আল-আহযাবের যুদ্ধ

হুদ যুদ্ধের পর অতর্কিত আক্রমণসহ বিভিন্ন গোত্রের বিরুদ্ধে যেসব শাস্তিমূলক পদক্ষেপ রাসুল (সাঃ) নিয়েছিলেন, তা মদীনার মুসলিমদের অবস্থানকে পুনরায় উপরে তুলে ধরতে এবং ইসলামী রাষ্ট্রের শাসন-কর্তৃত্বকে সুসংহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলো

আল্লাহর রাসুলের সমস্ত সুচিন্তিত পদক্ষেপ মূলতঃ মুসলিমদের প্রভাব বলয়কে বিস্তৃত করে এবং আরব ভূ-খন্ডে রাতারাতি তাদের ক্ষমতা প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করে নতুন এক উচ্চতায় নিয়ে যায় আর, সমস্ত আরব ভূ-খন্ড মুসলিমদের শক্তি-সামর্থ্যের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক হয়ে যায় এরপর থেকে আরব গোত্রগুলো তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণের গন্ধ পাওয়া মাত্রই মুসলিমদের সাথে যুদ্ধ করার চাইতে পালিয়ে যাওয়াকেই শ্রেয় মনে করতো গাতফান দুমা আল-জুন্দাল গোত্রের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিলো ওদিকে, কুরাইশরাও মুসলিমদের শক্তি-সামর্থ্যের সাথে পাল্লা দিয়ে পেরে উঠছিলো না এছাড়া, তারা নিজেরা মুসলিমদের মুখোমুখি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মনোবলও হারিয়ে ফেলেছিলো এর চমৎকার উদাহরণ হচ্ছে বদরের প্রান্তরে দ্বিতীয় যুদ্ধ যে যুদ্ধে কুরাইশরা ভীত আতঙ্কিত হয়ে পিছু হঠে যায়, এমনকি আর ফিরে আসার সাহসও করে না সমস্ত ঘটনা মদীনার মুসলিমদের জীবনযাত্রাকে কিছুটা হলেও স্থিতিশীল করে শত্রুপক্ষের অতর্কিত আক্রমণ থেকে তারা মোটামুটি নিশ্চিন্ত হয় এবং স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে মদীনার সমাজ গঠনে মনোযোগী হয় এছাড়া, পরিবর্তিত নতুন পরিস্থিতি তাদের চলমান জীবনযাত্রাকেও পরিবর্তন করে দেয় কারণ, ইতিমধ্যে যুদ্ধলব্ধ মালামাল হিসাবে প্রাপ্ত বনু নাযির গোত্রের জমিজমা, খেজুর বাগান, ঘরবাড়ী আসবাবপত্র রাসুল (সাঃ) মুহাজিরদের মধ্যে বন্টন করে দিয়েছিলেন যা তাদের জীবনযাত্রায় নতুন সৌভাগ্যের সূচনা করেছিলো কিন্তু, এসব কোনকিছুই তাদেরকে মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি, আর তা হলো আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ কারণ, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা কিয়ামত দিবস পর্যন্ত মুসলিমদের জন্য জিহাদ করা ফরজ করেছেন যাই হোক, পরিবর্তিত এই নতুন পরিস্থিতি একদিকে মুসলিমদের জীবনযাত্রার মানকে যেমন উন্নত করলো, অন্যদিকে তাদের জীবনে ফিরে আসলো কাঙ্খিত স্থিতিশীলতা

মদীনায় শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করলেও আল্লাহর রাসুল (সাঃ) শত্রুপক্ষের ষড়যন্ত্র বিশ্বাসঘাতকতার ব্যাপারে সবসময়ই সর্তক থাকতেন সমস্ত আরব ভূ-খন্ডের কোথায় মুসলিমদের বিরুদ্ধে কি ষড়যন্ত্র হচ্ছে কিংবা কারা কি ধরণের পরিকল্পনা করছে সমস্ত ব্যাপারে তিনি (সাঃ) সবসময়ই খোঁজখবর রাখতেন খবর সংগ্রহ করার জন্য তিনি সমস্ত আরব উপদ্বীপসহ এর বাইরের বিভিন্ন স্থানে গুপ্তচরও নিযুক্ত করেছিলেন যে কোন ধরনের অতর্কিত আক্রমণ সহিংতা মুকাবিলায় তিনি (সাঃ) থাকতেন অসম্ভব রকমের উদ্বিগ্ন এর মূল কারণ হলো, একদিকে মুসলিমদের শক্তিসামর্থ্য যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছিল সেইসাথে বাড়ছিলো তাদের শত্রুর সংখ্যা। এ ব্যাপার পরিলক্ষিত হলো মুলতঃ ইহুদী গোত্র বনু কাইনুকা বনু নাযিরকে মদীনা থেকে বিতাড়ন করা এবং গাতফান, হাদায়েল অন্যান্য গোত্রগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবার পর

অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে, রাসুল (সাঃ) শত্রুপক্ষের গতিবিধি পরিকল্পনা সম্পর্কে গুপ্তচরবৃত্তির মাধ্যমে খবর সংগ্রহ করাকেই সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ মনে করলেন কুরাইশরা যখন অন্যান্য গোত্রকে সঙ্গে নিয়ে মদীনা আক্রমণ করতে আসছিলো, তখন তিনি পদ্ধতিতেই বিপদ সম্পর্কে অবহিত হয়েছিলেন আর, নতুন বিপদ মুকাবিলার জন্য নিয়েছিলেন প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি

এদিকে মদীনা থেকে বহিষ্কৃ হবার পর ক্রুদ্ধ বনু নাযির গোত্র অপমানের প্রতিশোধ নেবার সুযোগ খুঁজতে থাকে লক্ষ্যে তারা চেষ্টা করে আরবের বিভিন্ন গোত্রকে মুহাম্মদ (সাঃ) এর বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলতে তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক মিলে মুহাম্মদ (সাঃ) এর বিরুদ্ধে একটি দলও তৈরী করে, যাদের মধ্যে ছিলো হুয়াই ইবন আখতাব, সালাম ইবন আবি আল-হুকাইক এবং কিনানাহ ইবন আবি আল-হুকাইক আর বনু ওয়ায়িল গোত্র থেকে ছিলো হাওদাহ ইবন কায়েস এবং আবু আম্মার তারা একত্রিত হয়ে মক্কার কুরাইশদের কাছে যায় কুরাইশরা হুয়াইকে তার দলবল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, আমি তাদের খাইবার আর মদীনার মাঝামাঝি এলাকায় রেখে এসেছি এবং মুহাম্মদ তাঁর সঙ্গীদের আক্রমণ করার জন্য তোমাদের সাহায্যের অপেক্ষায় আছিএরপর কুরাইশরা তাকে বনু কুরাইযা গোত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় যে, বনু কুরাইযা গোত্র মুহাম্মদ (সাঃ)-কে বোকা বানানোর উদ্দেশ্যে মদীনাতেই রয়ে গেছে যখন আক্রমণ হবে তখন তারা তোমাদের মদীনার ভেতর থেকে সাহায্য করবে পর্যায়ে কুরাইশরা দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে ভাবতে থাকে যে, তারা মদীনা আক্রমণ করবে কি করবে না তারা চিন্তা করে দেখলো যে, আসলে মুহাম্মদ (সাঃ) আর তাদের মধ্যে সত্যিকারের কোন বিরোধ নেই বিরোধের একমাত্র কারণ মুহাম্মদ (সাঃ) এর দাওয়াতী কাজ একসময় তারা এটাও ভাবলো যে, আসলে মুহাম্মদ যা বলে সেটাই কি সঠিক? দ্বিধাদ্বন্দে দোদুল্যমান হয়ে তারা শেষ পর্যন্ত ইহুদীদের জিজ্ঞেস করলোঃ হে ইহুদীরা! তোমরা তো আল্লাহর কাছ থেকে পূর্বেই কিতাব পেয়েছো আর তোমরা আমাদের আর মুহাম্মদের মধ্যে মতভেদের ব্যাপারেও জানো তোমরা বল তো আমাদের দ্বীন সঠিক না মুহাম্মদের?” উত্তরে ইহুদীরা বললোঃ অবশ্যই তোমাদের দ্বীন মুহাম্মদের আনীত দ্বীনের থেকে অনেক ভালো এবং ব্যাপারে তোমাদের দাবীও সঠিক!”

ইহুদীরাও এক আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস করতো এবং তারা খুব ভালো করেই জানতো যে, মুহাম্মদ (সাঃ) এর দাবী সম্পূর্ন সঠিক কিন্তু তারপরেও তারা শুধু তাদের ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ স্পৃহা থেকে মুসলিমদের উপর চুড়ান্ত এক আঘাত হানার জন্যই আরব গোত্রগুলোকে মুহাম্মদ (সাঃ) এর বিরুদ্ধে উসকে দিচ্ছিল বস্তুতঃ এক আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস করার পরও মূর্তিপূজাকে সঠিক বলে ঘোষণা দেয়া তৌহিদবাদীদের জন্য এক চরম অবমাননাকর কাজ কিন্তু তা সত্ত্বেও হীন স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে ধরনের ঘৃণ্য কাজের পূণরাবৃত্তি করতেও ইহুদীদের কোন দ্বিধা নেই

ইহুদীরা যখন নিশ্চিত হয়ে যায় যে, মদীনা আক্রমণ করার জন্য আহবান করা মাত্রই কুরাইশরা দ্বিধাহীন চিত্তে সাড়া দেবে, তখন তারা সমর্থনের আশায় কায়েস ঘাইলানের গাতফান গোত্র, বনু মুররাহ থেকে আরম্ভ করে বনু ফাযারাহ, বনু আসজা’, বনু সালিম, বনু সা, বনু আসাদসহ আরবের যতো গোত্রের মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব ছিলো তাদের সকলের কাছে যায় কিছুদিনের মধ্যেই কুরাইশদের নেতৃত্বে আরবের বিভিন্ন গোত্র একত্রিত হয়ে মদীনা উদ্দেশ্যে যাত্রা করে

যুদ্ধে কুরাইশরা এগিয়ে যায় আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে সময় তাদের সঙ্গে ছিলো ৪০০০ যোদ্ধা, ৩০০ অশ্বারোহী এবং আরও ১৫০০ উটের পিঠে আরোহনকারী যোদ্ধা উইয়াইনা ইবন হিসন ইবন হুদায়ফার নেতৃত্বে বনু ফাযারাহ গোত্রের পক্ষে ছিলো ১০০০ যোদ্ধার এক বিরাট বাহিনী আসজাগোত্র মিশআর ইবন রাখাইলাহ এবং মুররাহ গোত্র আল-হারিছাহ ইবন আউফ এর নেতৃত্বে ৪০০ যোদ্ধা নিয়ে যুদ্ধ অংশগ্রহন করে বনু সালিম এবং বীর মানার লোকেরা ৭০০ যোদ্ধা নিয়ে বিশাল বাহিনীর সাথে যুক্ত হয় তারা সকলে একত্রিত হবার পর এদের সাথে বনু সা এবং বনু আসাদ গোত্র তাদের দলবল নিয়ে যুক্ত হয়ে বাহিনীর শক্তি আরও বৃদ্ধি করে বিশাল সৈন্যদলের মোট সংখ্যা শেষ পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়ায় ১০ হাজারে মিলিত সৈন্যবাহিনী আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে মদীনা আক্রমণ করতে এগিয়ে যায় মুহাম্মদ (সাঃ) এর কাছে সংবাদ পৌঁছালে তিনি (সাঃ) মদীনার ভেতরেই পরিখা খননের সিদ্ধান্ত নেন মূলতঃ সালমান ফারসী (রা.) পরামর্শেই সাহাবীরা মদীনার চারপাশে পরিখা খননের কাজ শুরু করে এবং মুসলিমদের উৎসাহ দেবার জন্য কাজে রাসুল (সাঃ) নিজেও অংশগ্রহন করেন পরকালে জান্নাতের আশায় সাহাবীরা প্রচন্ড উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করতে থাকেন আল্লাহর রাসুলও (সাঃ) কাজে তাদের সর্বাত্মক শ্রম দেবার জন্য উৎসাহিত করতে থাকেন ফলে মাত্র ছয়দিনের মধ্যেই বিশাল পরিখা খননেন কাজ সম্পন্ন হয় এছাড়া, পরিখার সম্মুখভাগে অবস্থিত বাড়ীগুলোকে সুরক্ষিত করা হয় আর পরিখার বাইরের (অর্থাৎ যে বাড়ীগুলো পরিখার বাইরের অংশে ছিলো) বাড়ীগুলোকে জনশূণ্য করা হয় নারী শিশুদের সুরক্ষিত ঘর-বাড়ীগুলোর মধ্যে রাখা হয় এরপর আল্লাহর রাসুল (সাঃ) ৩০০০ যোদ্ধাসহ শত্রুপক্ষকে মুকাবিলা করতে এগিয়ে যান তাঁর পেছন দিকে ছিলো সাল উপত্যকা এবং সদ্য সমাপ্ত পরিখাটি ছিলো রাসুল (সাঃ) এবং তাঁর শত্রুপক্ষের মাঝামাঝি এখানেই তিনি (সাঃ) দলবলসহ অবস্থান নেন এবং তাঁর জন্য টানানো হয় একটি লাল রঙের তাঁবু

ওদিকে কুরাইশ তাদের মিত্রবাহিনী বিশাল দলবল নিয়ে ওহুদের প্রান্তরে পৌঁছে যায় তারা ভেবেছিলো হয়ত এখানেই তাদের কাঙ্খিত শত্রুপক্ষের সাথে সাক্ষাৎ হবে কিন্তু তাদের অদৃষ্টে তা হবার ছিলো না বাধ্য হয়ে তারা দলবল নিয়ে আরও সামনের দিকে এগিয়ে যায় এবং মদীনায় না পৌঁছা পর্যন্ত তাদের যাত্রা অব্যাহত থাকে মদীনায় পৌঁছে তারা তাদের সামনে বিরাট এক পরিখা দেখে হতবুদ্ধি হয়ে পড়ে কারণ ধরনের কোন আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধ কৌশলের সাথে তাদের একেবারেই পরিচয় ছিলো না অবস্থায় তারা মদীনায় বাইরে পরিখার অপর পাশে অবস্থান নিতে বাধ্য হয় এবং ভাবতে থাকে তাদের পরবর্তী যুদ্ধ কৌশল কিন্তু আবু সুফিয়ান তার সাথীরা শীঘ্রই বুঝতে পারে এখানে তাদের অপেক্ষার সময় হবে দীর্ঘ কারণ বিশাল পরিখা অতিক্রম করা তাদের পক্ষে আসলে সম্ভব হবে না এরকম একটা অমীমাংসিত যুদ্ধাবস্থা তাদের জন্য হয়ে যায় যন্ত্রনাদায়ক তখন ছিলো শীতকাল, হু-হু ঠান্ডা বাতাস সবার গায়ে যেন হুল ফোটাচ্ছিল রকম অসহনীয় অবস্থায় ক্রমশ সবাই যুদ্ধের মনোবল হারিয়ে ফেলতে লাগলো এবং ভেতরে ভেতরে বাড়ী ফিরে যাবার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়লো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করে, হুয়াই ইবন আখতাব কুরাইশ তাদের মিত্রদের পরামর্শ দেয় যে, বনু কুরাইযা গোত্রকে মুসলিমদের সাথে কৃত শান্তিচুক্তি ভঙ্গ করে তাদের পক্ষে যুদ্ধ করতে বলা উচিত কারণ যদি তা হয় তাহলে হির্বিশ্বের সাথে মুসলিমদের সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং তারা তখন অবলীলায় মদীনা আক্রমণ করতে পারবে

প্রস্তাবটি কুরাইশ গাতফান গোত্রের খুবই পছন্দ হওয়ায় তারা হুয়াইকে প্রস্তাবটি বনু কুরাইযার নেতা কা ইবন আসাদের কাছে উপস্থাপন করার জন্য নিযুক্ত করে হুয়াই এর আগমনের সংবাদ শুনে কা তার মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেয় কিন্তু কা দরজা খোলা না পর্যন্ত হুয়াই তার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে অনেক চেষ্টা-চরিত্রের পর শেষ পর্যন্ত কা তার ঘরের দরজা খুলে দেয় দরজা খোলার পর কা লেঃ তোমার উপর সৌভাগ্য বর্ষিত হোক কা! আমি তোমার জন্য বহন করে এনেছি অনন্ত সৌভাগ্য আর আমার সাথে রয়েছে এক বিশাল বাহিনী আমার সাথে রয়েছে কুরাইশ সর্দার তাদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা আরও রয়েছে গাতফানের সর্দার তাদের নেতৃস্থানীয় মানুষেরা তারা আমাদের সাথে মর্মে প্রতিজ্ঞা করেছে যে, তারা মুহাম্মদ তাঁর সঙ্গীদের নিশ্চিহ্ন না করে এখান থেকে যাবে না কা ইবন আসাদ তার প্রস্তাবে ইতস্তত করছিলো তার মনে পড়ছিলো মুহাম্মদ (সাঃ) এর সত্যবাদিতা মহানুভবতার কথা একই সাথে সে ধরনের বিশ্বাসঘাতকতামূলক কর্মকান্ডের পরবর্তী ফলাফল নিয়েও আতঙ্কিত ছিলো কিন্তু হুয়াই অত্যন্ত ধূর্ততার সাথে তার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকলো তাকে স্মরণ করিয়ে দিলো মুহাম্মদ (সাঃ) এর ইহুদীদের সাথে কৃত ব্যবহার এর কথা আবারও তাকে জানালো শত্রু মুকাবিলায় মিত্রবাহিনীর শক্তি সম্পর্কে শেষ পর্যন্ত হুয়াই এর ইচ্ছারই জয় হলো এবং কা তার প্রস্তাবে সম্মতি দিলো

এরপর কাফিরদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কা মুসলিমদের সাথে তার কৃত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এবং তার মুহাম্মদ (সাঃ) এর মধ্যকার সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয় এরপর সে রাসুল (সাঃ) এর অজান্তেই কুরাইশ তাদের মিত্রবাহিনীর সাথে যোগ দেয় সংবাদ আল্লাহর রাসুল (সাঃ) সাহাবাদের কাছে পৌঁছালে তারা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কায়, রাসুল (সাঃ) আউস গোত্রের নেতা সা ইবন মুয়াজ, খাযরাজ গোত্রের নেতা সা ইবন উবাদাহ এবং তাদের সাথে আবদুল্লাহ ইবন রাওয়াহাহ খাওওয়াত ইবন জুবায়েরকে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে অনুসন্ধান করার জন্য পাঠিয়ে দেন ঘটনা সত্য হলে তিনি (সাঃ) সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে তাঁকে জানানোর নির্দেশ দেন, যাতে মুসলিমদের মনোবলে কোন ফাটল না ধরে আর যদি তা না হয় অর্থাৎ বনু কুরাইযা যদি তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে তাহলে তাদের তা উচ্চস্বরে ঘোষণা করতে বলেন নির্দেশ পাবার পর তারা গিয়ে দেখেন, তারা যতোটা শুনেছিলেন পরিস্থিতি আসলে তার চাইতেও ভয়াবহ তারা বনু কুরাইযাকে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার অনুরোধ করে কিন্তু বনু কুরাইযা এর বিনিময়ে তাদের ভাই বনু নাযিরকে মদীনায় প্রত্যাবর্তনের অনুমতি দাবী করে সা ইবন মুয়াজ যিনি একসময় বনু কুরাইযার মিত্রপক্ষ ছিলেন, আপ্রাণ চেষ্টা করেন কাবের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে কিন্তু তার ফলাফল হয় আরও খারাপ পর্যায়ে কা তার সঙ্গীরা মুহাম্মদ (সাঃ)-কে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে নানারকম কথা বলতে থাকে তারা লেঃ আল্লাহর রাসুল আবার কে? আমাদের মুহাম্মদ নামে কারও সাথে কখনো কোনরকম চুক্তি ছিলো না দূতেরা মুহাম্মদ (সাঃ) এর কাছে গিয়ে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন এবং সমস্ত ঘটনা তাঁকে অবহিত করেন এরপর পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর আকার ধারণ করে, আর চারদিকে বিরাজ করতে থাকে মূর্তিমান আতঙ্ক

এর মধ্যে শত্রুদের সম্মিলিত বাহিনী মুখোমুখি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় বনু কুরাইযা গোত্র তাদের মিত্রপক্ষের কাছে যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য দশদিনের সময় চেয়ে নেয় আর সময়ের মধ্যে সম্মিলিত সৈন্যবাহিনী মুসলিমদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনা করে মুহাম্মদ (সাঃ)-কে পরাস্ত করার জন্য তারা তাদের বাহিনীকে তিনভাগে ভাগ করে ঠিক হয় যে, ইবন আল আওয়ার আল-সিলমীর নেতৃত্বাধীন দল উপত্যকার দিক হতে মদীনাকে রুদ্ধ করবে উইয়াইনা ইবন হিসন এগিয়ে যাবে এক পাশ থেকে আর আবু সুফিয়ান তার দলবল নিয়ে পরিখার সামনের দিক থেকে আক্রমণ চালাবে অবস্থায় শ্বাসরুদ্ধকর আতঙ্ক মুসলিমদের গ্রাস করে, যাতে তারা হয়ে পড়ে প্রচন্ড পরিমাণে ভীত আর অপরদিকে প্রতিপক্ষের সম্মিলিত বাহিনী আত্মবিশ্বাসে টগ করে ফুটতে থাকে মুসলিমদের চোখে পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান হয় তাদের শক্তি-সামর্থ্য শত্রুপক্ষ পরিখার দিকে এগুতে থাকে তাদের মধ্যে কেউ কেউ পরিখা অতিক্রম করতেও সমর্থ হয় এদের মধ্যে ছিল কুরাইশ গোত্রের কিছু অশ্বারোহী আমর ইবন আবদ উদ্দ, ইকরামাহ ইবন আবি জাহল এবং দিরার ইবন আল-খাত্তাব পরিখার অপ্রশস্ত একটি অংশের মধ্য দিয়ে ওপারে চলে যায় তারা তাদের ঘোড়াকে এমনভাবে প্রহার করে যে, ঘোড়া তাদের সহ সজোরে লাফ দিয়ে পরিখা আর সালের মধ্যবর্তী স্যাঁতসেঁতে এলাকায় চলে আসে

শত্রুপক্ষ পরিখার যে অপ্রশস্ত এলাকা দিয়ে এপারে আসার চেষ্টা করছিল আলী ইবন আবু তালিব কয়েকজন মুসলিমসহ সে স্থানে অবস্থান নিলেন আলী ইবন আবু তালিব তাঁর সঙ্গীরা যখন পথরোধ করে দাঁড়ালো তখন আমর ইবন আবদ উদ্দ তাদেরকে সম্মুখ যুদ্ধের জন্য আহবান করলো আলী (রা.) তার চ্যালেঞ্জ গ্রহন করে বললেনঃ তুমি আগে ঘোড়ার পিঠ থেকে নেমে আসোউত্তরে আমর বললোঃ হে আমার ভ্রাতুষ্পুত্র! আমি তোমাকে হত্যা করতে চাই নাআলী (রা.) বললেনঃ কিন্তু আমি তোমাকে হত্যা করতে চাই এরপর তাদের মধ্যে যুদ্ধ হলো এবং আলী (রা.) তাকে হত্যা করে ফেললেন বাকী অশ্বারোহীরা দৃশ্য দেখে ঝড়ের গতিতে পরিখা পার হয়ে ওপারে চলে গেল কিন্তু দূর্ঘটনা কাফিরদের মনোবলে এতোটুকু ফাটল ধরাতে পারলো না বরং তারা ক্রুদ্ধ হয়ে আরও দৃঢ়তার সাথে ভয়ঙ্কর আক্রমণের প্রস্তুতি নিলো ইতিমধ্যে বনু কুরাইযার ন্মত্ত যোদ্ধারা একে একে তাদের দূর্গ ছেড়ে বের হয়ে মদীনায় প্রবেশ করতে শুরু করলো আশেপাশের মুসলিম বসতিগুলোর মাঝে আতঙ্ক ছড়ানোই ছিল এর মূল উদ্দেশ্য পরিস্থিতিতে মুসলিম বসতিগুলোতে বিরাজ করতে থাকল আতঙ্ক, বিভীষিকা চরম উদ্বেগ কিন্ত উদ্বেগ আল্লাহর রাসুল (সাঃ)-কে এতোটুকু স্পর্শ করলো না বরং তিনি (সাঃ) ইস্পাত কঠিন মনোবল নিয়ে আল্লাহর সাহায্য বিজয়ের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন

স্বস্তিদায়ক ঘটনা ঘটলো নুয়া ইবন মাসউদ এর মাধ্যমে তিনি ইতিমধ্যে ইসলাম গ্রহন করেছিলেন, কিন্তু তার গোত্রের লোকেরা সংবাদ জানতো না মুসলিমদের সঙ্কটপূর্ণ সময়ে তিনি আল্লাহর রাসুলের কাছে আসলেন এবং শত্রুদের ঐক্যে ফাটল ধরানোর জন্য তাঁকে একটা উপায় বাতলে দিলেন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি বনু কুরাইযা গোত্রের নিকট গেলেন অজ্ঞতার যুগে বনু কুরাইযার ছিলো তার অন্তরঙ্গ বন্ধু আর তাদের মধ্যে ছিলো চমৎকার সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সম্পর্কের সূত্র ধরে তিনি বনু কুরাইযাকে বুঝিয়ে বললেন, যদি গাতফান আর কুরাইশ গোত্র তাদের মুহাম্মদ (সাঃ)-কে একাকী মুকাবিলার জন্য ফেলে চলে যায় তাহলে তার পরিণতি কি হতে পারে তিনি বিষয়ে যে যুক্তি তুলে ধরলেন তা হলো, কুরাইশ আর গাতফান গোত্র হয়তো এখানে খুব বেশীদিন অবস্থান করবে না, কারণ তারা এলাকার বাসিন্দা না অবস্থায় যদি তারা যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে বনু কুরাইযা কোনভাবেই মুসলিমদের এককভাবে মুকাবিলা করতে পারবে না

সবশেষে তিনি তাদের পরামর্শ দিলেন যে, কুরাইশ গাতফান গোত্রের নেতৃস্থানীয় দুজনকে তাদের হাতে জিম্মি হিসাবে না রাখা পর্যন্ত যেন তারা যুদ্ধের ময়দানে না যায় কারণ জিম্মিদের জন্য তারা এখানে অবস্থান করতে বাধ্য হবে পরিস্থিতি এরকম হলেই একমাত্র তাদের মুসলিমদের নিশ্চিহ্ন করতে সম্মিলিত বাহিনীর সাথে প্রাণপণ যুদ্ধ করা উচিত কুরাইযা ভেবে দেখলো যে, এটা একটা চমৎকার পরামর্শ এরপর নুয়া কুরাইশদের গিয়ে বললেন, বনু কুরাইযা মুহাম্মদের বিরোধিতা করার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে শুধু তাই নয়, তাদের পূর্বের সিদ্ধান্তের জন্য তারা যথেষ্ট লজ্জিত অনুতপ্তও হয়েছে তারা তাদের কর্মফলের প্রায়শ্চিত্ত করার লক্ষ্যে কুরাইশ গাতফান গোত্রের নেতৃস্থানীয় দুজনকে মুসলিমদের হাতে তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেন তারা তাদের হত্যা করতে পারে সুতরাং তারা যদি তোমাদের কাউকে জিম্মি হিসাবে দাবী করে, তাহলে কক্ষনো তাদের দাবী মেনে নিও না আর খবরদার! তাদের হাতে তোমাদের কাউকে তুলে দিও না গাতফান গোত্রের কাছে গিয়েও তিনি তাদের একই কথা বললেন

নুয়ামের কথায় ইহুদীদের ব্যাপারে আরবদের সন্দেহ ঘনীভূত হলো এবং আবু সুফিয়ান কা এর কাছে সংবাদ পাঠাল যে, তারা দীর্ঘদিন ধরে মুহাম্মদকে অবরোধ করে আছে, সুতরাং বনু কুরাইযা যেন আগামীকালই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় এর উত্তরে কা জানাল যে, আগামীকাল হচ্ছে সাববাথ এদিন তারা যুদ্ধও করে না, কোনও কাজও করে না ধরনের উত্তরে আবু সুফিয়ান খুবই রাগান্বিত হয়ে গেল এবং তার কাছে নুয়ামে কথাই সত্য মনে হলো সে আবারও আর একদল বার্তাবাহক পাঠিয়ে জানালো যে, আগামীকালই মুহাম্মদকে আক্রমণ করা খুবই জরুরী তারা যেন সাববাথ পালন না করে অন্যদিন তা পালন করে বার্তাবাহকরা কুরাইযাকে এটাও জানালো যে, তারা যদি আগামীকাল যুদ্ধ না করে তাহলে তাদের আর সম্মিলিত বাহিনীর মধ্যে কৃত সকল চুক্তি এখানেই শেষ হয়ে যাবে এবং শেষ পর্যন্ত বনু কুরাইযাকে একাকীই মুহাম্মদ (সাঃ) এর মুখোমুখি হতে হবে একথা শোনার পরও কুরাইযা যুদ্ধ না করে তাদের সাববাথ পালনের সিদ্ধান্তেই অটল থাকলো, উপরন্তু কুরাইশদের কাছে দুজন জিম্মি দাবী করে বসলো তাদের দাবীর পর নুয়ামের কথার সত্যতা সম্পর্কে আবু সুফিয়ানের আর কোন সন্দেহ রইলো না এরপর সে নতুন কৌশলের কথা ভাবতে লাগলো আর গাতফান গোত্রের সাথে শলা-পরামর্শ করে মুহাম্মদ (সাঃ)-কে আক্রমণ করার ব্যাপারে দ্বিতীয় চিন্তা করতে থাকল

সে রাতে আল্লাহ তাআলা তাদের জন্য পাঠালেন তীব্র শীতল ঝড়ো হাওয়া, আর সেই সাথে বজ্রপাত বিজলীর চমক তীব্র আচমকা ঝড়ে শত্রুপক্ষের তাঁবুগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল এদিক ওদিক ছিটকে গেল তাদের রান্নার সমস্ত সরঞ্জাম ভয়াবহ আতঙ্ক তাদের গ্রাস করে ফেললো প্রতিমূহুর্তে তারা ভাবতে লাগলো, নাজুক এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে এখনই বুঝি মুহাম্মদ আর তাঁর সঙ্গীরা তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে ছিন্নভিন্ন করে ফেলবে তাদের এরমধ্যে আবার তুলাইহা চিৎকার করতে লাগলোঃ মুহাম্মদ তোমাদের দিকে ধেয়ে আসছে, প্রাণ বাঁচানোর জন্য তোমরা পালাওএকথা শুনে আবু সুফিয়ান ঘোষনা দিলোঃ কুরাইশরা! তোমরা ক্ষান্ত হও আমি আর এর মধ্যে নেই এরপর তারা যে যা পারলো সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধের ময়দান থেকে পালিয়ে বাঁচল গাতফানসহ বাকী সব গোত্রও একই কাজ করলো সকাল হওয়ার পর দেখা গেল, শত্রুপক্ষ উধাও হয়ে গেছে

শত্রুপক্ষের এই করুণ পরিণতি দেখার পর আল্লাহর রাসুল (সাঃ) মুসলিমদেরসহ পরিখা ছেড়ে মদীনায় চলে আসলেন আর এভাবেই আল্লাহ তাআলা ভয়াবহ শত্রু মুকাবিলা করা থেকে মুসলিমদের মুক্তি দিলেন এরপর রাসুল (সাঃ) বনু কুরাইযা গোত্রকে শায়েস্তা করার সিদ্ধান্ত নিলেন এবং ইহুদীদের বিশ্বাসঘাতকতা ষড়যন্ত্র থেকে চিরতরে মুক্তি পাবার বন্দোবস্ত করলেন কারণ এরাই হচ্ছে সেই বিশ্বাসঘাতকের দল যারা চুক্তি ভঙ্গ করে শত্রুপক্ষের সাথে হাত মিলিয়েছিল আর মুসলিমদের চিরতরে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছিল তিনি (সাঃ) মুয়াজ্জিনকে ডেকে নির্দেশ দিলেন যেন সে ঘোষনা দেয়, যে আল্লাহ তাঁর রাসুলের অনুগত সে যেন বনু কুরাইযার আবাসস্থলে না পৌঁছান পর্যন্ত আছর নামাজ না পড়ে রাসুল (সাঃ) তাঁর পতাকা হাতে আলী (রা.)-কে আগে পাঠিয়ে দিলেন এবং তার পিছে পিছে মুসলিম সেনাদল প্রচন্ড উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে রওনা হল মুসলিমরা বনু কুরাইযা গোত্রকে পঁচিশ দিন ঘেরাও করে রেখেছিল শেষ পর্যন্ত ইহুদীরা মুহাম্মদ (সাঃ) এর সাথে আপোষ করে বিষয়টা ফয়সালা করার সিদ্ধান্ত নিল অনেক বাকবিতন্ডার পর সা ইবন মুয়াজের মধ্যস্থতাকে তারা মেনে নিল এবং তার দেয়া সিদ্ধান্ত তারা মেনে নেবে বলে ঠিক করল সা ইবন মুয়াজ রায় দিলেন যে, গোত্রের পুরুষদের হত্যা করা হোক তাদের সমস্ত সম্পত্তি মুসলিমদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হোক আর নারী শিশুদের দাস (সাবাইয়া) হিসাবে গ্রহন করা হোক পরবর্তীতে সাদের রায়কেই বাস্তবায়ন করা হয় আর এভাবেই মদীনা থেকে বনু কুরাইযার অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, আর মদীনাবাসীও তাদের বিশ্বাসঘাতকতা ষড়যন্ত্র থেকে চিরতরে মুক্তি পায়

শত্রুপক্ষের সম্মিলিত বিশাল বাহিনীর লজ্জাজনক পরাজয় পরবর্তীতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে কুরাইশদের বড় ধরনের কোন আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নেয়ার সকল সম্ভাবনাকে নির্মূল করে দেয় আর বনু কুরাইযার করুণ পরিণতি দেখার পর রাসুল (সাঃ) এর সাথে চুক্তি ভঙ্গকারী বিতাড়িত বাকী তিনটি ইহুদী গোত্রও মদীনার আশেপাশে থাকার সাহস হারিয়ে ফেলে যার ফলে মদীনায় আল্লাহর রাসুল (সাঃ) সাহাবীদের একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম হয় আর আরবের সমস্ত গোত্ররাও মুসলিমদের ব্যাপারে চিরতরে সর্তক হয়ে যায়

No comments:

Post a Comment