বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
হে দেশবাসী! আওয়ামী-বিএনপি
শাসকগোষ্ঠীকে অপসারণ করে হিযবুত তাহরীর-এর নেতৃত্বে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় সামরিক
বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারদের নিকট দাবি তুলুন এবং এ দাবিতে রাজপথে নেমে আসুন
আওয়ামী-বিএনপির
শাসন বাংলাদেশকে একটি মৃত্যু আর ধ্বংসস্তুপের ভূমিতে পরিণত করেছে। চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা,
বিশৃঙ্খলা, হরতাল, পুলিশবাহিনী কর্তৃক গুলি করে নির্বিচারে মানুষ হত্যা এবং রাষ্ট্রীয়
সন্ত্রাস ব্যর্থ আওয়ামী-বিএনপির রাজনীতির ফসল ছাড়া আর কিছুই না। তথাকথিত অবাধ ও সুষ্ঠু
নির্বাচন, তথাকথিত গণতন্ত্র, কিংবা তথাকথিত সাংবিধানিক শাসনের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং
এরকম আরও অনেক সস্তা শ্লোগাণের নামে আওয়ামী-বিএনপি শাসকগোষ্ঠী সমগ্র দেশকে একটি গোরস্তানে
পরিণত করেছে। অন্যকথায়, আওয়ামী-বিএনপির শাসন = জনগণের লাশের স্তুপ। অধিকন্তু নিম্নের সব তালিকা
আওয়ামী-বিএনপির শাসনের প্রকৃত চেহারা তুলে ধরে:
§ আওয়ামী-বিএনপির শাসন = লুটপাট আর দুর্নীতি
§ আওয়ামী-বিএনপির শাসন = অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর
দরিদ্র জীবনযাপন
§ আওয়ামী-বিএনপির শাসন = নারী নির্যাতন
§ আওয়ামী-বিএনপির শাসন = ইসলাম ও রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সম্মানের
উপর আঘাত
§ আওয়ামী-বিএনপির শাসন = মার্কিন-ভারতের
দালালি
ইত্যাদি, ইত্যাদি
এগুলো
হলো বিগত দুই দশকের আওয়ামী-বিএনপির শাসন এবং গণতন্ত্রের ফসল। সুতরাং তারপরও কেন তথাকথিত
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্যে অহেতুক এতো উত্তেজনা? এবং হাসিনা-খালেদা বা আওয়ামী-বিএনপির
সংলাপ হোক কিংবা না হোক এতে কি আসে যায়? সংলাপ হোক কিংবা সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন
হোক কিংবা একদলীয় নির্বাচন হোক, ফলাফল সেই একই। জনগণের জীবনে কোন প্রকৃত পরিবর্তন আসবে
না। প্রকৃত পরিবর্তনের জন্য পুরো শাসকগোষ্ঠীকে অপসারণ করতে হবে। যার জন্য প্রয়োজন সামরিক
বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারদের দেশের জনগণের পক্ষে অবস্থান নেয়া। কারণ জনগণের হাতে পরিবর্তনের
হাতিয়ার নেই। যা নিষ্ঠাবান সেনাঅফিসারদের হাতে বিদ্যমান কারণ তারা সামরিক ক্ষমতা দ্বারা
শাসকগোষ্ঠীকে অপসারণ করতে সক্ষম। আর তাই আওয়ামী-বিএনপি শাসকগোষ্ঠীকে অপসারণ তাদের কাঁধে
অর্পিত একটি দায়িত্ব কিন্তু তা সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নয়; বরং ইসলামী শাসন তথা
খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নিষ্ঠাবান এবং সচেতন রাজনীতিবিদদের হাতে শাসন ক্ষমতা হস্তান্তর
করার লক্ষ্যে।
দেশের সকল নিষ্ঠাবান, সচেতন ও চিন্তাশীল
জনগণের প্রতি হিযবুত তাহরীর-এর জোরালো আহ্বানঃ
১.
আওয়ামী-বিএনপির শাসন এবং তাদের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে প্রত্যাখ্যান করুন এবং তাদের সংলাপের
জন্য ও আবারও ভোট দিয়ে তাদের উভয়ের একটিকে ক্ষমতায় আনার তাদের নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করবেন না।
২.
বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর অপসারণ এবং খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হিযবুত তাহরীর-এর সাথে রাজনৈতিক
সংগ্রামে যোগদান করুন।
৩.
আওয়ামী-বিএনপি শাসকগোষ্ঠীকে অপসারণ করে হিযবুত তাহরীর-এর নেতৃত্বে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় সামরিক
বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারদের নিকট দাবি তুলুন এবং এ দাবিতে রাজপথে নেমে আসুন। আওয়ামী-বিএনপির
মধ্যে চলমান এই যুদ্ধকে শুধুমাত্র তাদের পারস্পরিক বিষয় ভেবে ভুল করবেন না। মূলতঃ তাদের
এই যুদ্ধ আপনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং এই যুদ্ধে তারা রণসজ্জিত। সুতরাং আপনাদেরও শাসন
ক্ষমতা পরিবর্তনের হাতিয়ার প্রয়োজন এবং তা অর্জন সম্ভব হবে যখন সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান
অফিসারগণ শাসকগোষ্ঠীকে অপসারণ করতে আপনাদের পাশে দাঁড়াবে।
সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারদের
প্রতি আমাদের আহ্বানঃ
১.
মুসলিম হিসেবে আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। খিলাফত প্রতিষ্ঠার গুরুদায়িত্ব
অন্য যে কোন মুসলিমের চেয়ে আপনাদের কোন অংশে কম নয় বরং অনেক বেশী, কারণ আপনাদের হাতে
রয়েছে শাসন ক্ষমতা পরিবর্তনের হাতিয়ার অর্থাৎ সামরিক ক্ষমতা।
২.
জনগণ ও দেশের স্বার্থরক্ষার যে শপথ আপনারা নিয়েছেন তা অবিলম্বে পূর্ণ করতে হবে। আর
কতকাল আপনারা হাসিনা এবং বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর পাহাড়াদারী করবেন; আর কত প্রাণ ঝরলে এবং
এদেশ আর কত ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি হলে আপনারা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা এবং তাঁর
রাসূল (সাঃ) এর আহ্বানে সাড়া দিবেন?
৩.
খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আপনাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সুন্নাহ অনুসরণ করে আনসারদের ভূমিকা পালন
করতে হবে। আনসারগণের (রা.) সহায়তায়, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মদিনায় প্রথম ইসলামী রাষ্ট্র
প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা ১৩৪২ হিজরী (১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দ) পর্যন্ত চলমান ছিল। যদি আপনারা
খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠার আনসার হন, তাহলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আপনাদের আনসার
সাহাবীদের (রা.) মতো একইভাবে পুরষ্কৃত করবেন, ইনশা’আল্লাহ। সুতরাং, এই মূহুর্তে আপনারা
সেনাঅফিসারদের হত্যাকারী, হাসিনার সরকারকে অপসারণ করুন এবং খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে হিযবুত তাহরীর-এর নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। খিলাফত সেনাঅফিসারদের আসল
হত্যাকারী ও চক্রান্তকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে যা হাসিনা কর্তৃক বিডিআর সৈনিকদের
প্রহসনমূলক সাজানো বিচারের মতো হবে না।
يَا أَيُّهَا
الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا
يُحْيِيكُمْ
“হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের সে আহ্বানে তোমরা সাড়া দাও, যখন
তিনি তোমাদের এমন কিছুর দিকে আহ্বান করেন যা তোমাদের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করে।” [সূরা
আল-আনফাল: ২৪]
১২
মুহাররম, ১৪৩৫ হিজরী
১৫
নভেম্বর, ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ
No comments:
Post a Comment