শুক্রবার, ২রা রমজান, ১৪৩৬ হিজরি ১৯.
০৬. ২০১৫
::প্রেস বিজ্ঞপ্তি::
হিযবুত তাহরীর, আজ
সমগ্র মুসলিম উম্মাহ্ এবং বিশেষতঃ তার প্রভাবশালী ও ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তিবর্গের
প্রতি একটি বিশেষ আহ্বান জানিয়েছে; যা আজ বাদ জুমু’আ গুলশান কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত
একটি সমাবেশে পড়ে শুনানো হয়
আজ, রমযান মাসের
প্রথম শুক্রবার, ১৪৩৬ হিজরী, হিযবুত তাহরীর-এর পক্ষ থেকে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ্’র
প্রতি একটি বিশেষ আহ্বান জানানো হয়, যার শিরোনাম ছিল, “হিযবুত তাহরীর-এর পক্ষ থেকে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ্ এবং বিশেষতঃ তার
প্রভাবশালী ও ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তিবর্গের প্রতি চূড়ান্ত আহ্বানের পূর্ববর্তী
আহ্বান।” আহ্বানটি পড়ে শোনানোর জন্য সমগ্র বিশ্বব্যাপী হিযবুত তাহরীর-এর
বিভিন্ন শাখাসমূহ তাদের নিজ নিজ দেশের প্রসিদ্ধ মসজিদে বাদ জুমু’আ সমাবেশের আয়োজন করে। বাংলাদেশে, হিযবুত তাহরীর-এর
সদস্য মোহাম্মদ হেদায়েত উল-ইসলাম, ঢাকাস্থ গুলশান কেন্দ্রীয় মসজিদ (আজাদ মসজিদ)
প্রাঙ্গণে কয়েক শত মুসলিমের সামনে আহ্বানটি পড়ে শোনান।
আহ্বানটিতে হিযবুত
তাহরীর, মুসলিম উম্মাহ্’র বর্তমান অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থার চিত্র তুলে ধরা হয়...
সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন, শাসকদের বিশ্বাসঘাতকতা, উম্মাহ্’র সম্পদ লুটপাট, উম্মাহ্’র
শত্রুদের কর্তৃক তার সম্মানকে ভূ-লুণ্ঠিত করা ইত্যাদি। হিযব উম্মাহ্’র বর্তমান
অধঃপতিত অবস্থা থেকে তার উত্থানের পথ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে, অর্থাৎ খিলাফতে
রাশেদাহ্ রাষ্ট্রের পুণঃপ্রতিষ্ঠা। যা রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে ইসলাম বাস্তবায়ন করবে
এবং দাওয়াহ্ ও জিহাদের মাধ্যমে তা পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে দিবে, এভাবেই সর্বশক্তিমান,
সর্বজ্ঞানী আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা এটাকে বিজয় দান করবেন। খিলাফতের জন্য কাজ
করা কেবলমাত্র একারণেই অপরিহার্য নয় যে তা বাস্তবতা পর্যালোচনা করে মুক্তি ও বিজয়
লাভের একমাত্র পথ হিসেবে প্রাপ্ত হয়েছে। বরং, এই অপরিহার্যতার প্রথম এবং প্রধান
কারণ হচ্ছে এটা একটি মহান ফরয, সকল ফরযের মা এবং শিরোমণি, যার মাধ্যমে শারী’আহ্
বাস্তবায়িত হয় এবং হুদুদ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং যা ছাড়া কোনটাই সম্ভব নয়...এবং একটি
ফরয দায়িত্ব পালনের জন্য যা যা করনীয় সেগুলোও ফরয।
তারপর হিযব-এর পক্ষ
থেকে একটি উদাত্ত আহ্বান রাখা হয়, যার কিছু অংশ নিম্নে উদ্ধৃত করা হয়েছে এবং আমরা
বাংলাদেশের মুসলিমদের এবং বিশেষতঃ প্রভাবশালী ও ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তিবর্গের
নিকট এই “চূড়ান্ত আহ্বানের পূর্ববর্তী আহ্বান” প্রতি ইতিবাচক সাড়া প্রদানের আহ্বান
জানাচ্ছিঃ
হে মুসলিমগণ এবং বিশেষত তার প্রভাবশালী ও ক্ষমতার
অধিকারী ব্যক্তিবর্গ!
...এরকম একটি সময়ে
আমরা আপনাদের উদ্দেশ্যে চূড়ান্ত আহ্বানের পূর্ববর্তী এই আহ্বান জানাচ্ছি যখন
খিলাফত ইতিমধ্যে ব্যাপক মুসলিম জনগোষ্ঠীর জনমতের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে...
এখন আর কিছুই বাকি নাই, শুধু আল্লাহ্’র নির্দেশ অনুযায়ী আনসারগণের মতো একজন আনসার
এবং সা’দ ইবনে মু’য়ায-এর মতো একজন সা’দ-এর এগিয়ে আসা ব্যতীত... নিষ্ঠাবান ব্যক্তিগণ, যারা তাদের নিজ দ্বীনের সহায়তায়
এগিয়ে আসবে, খিলাফতের কর্মীদের সহায়তায়, হিযবুত তাহরীর-এর সহায়তায়, এর মাধ্যমে
প্রতিষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় খিলাফতে রাশেদাহ্, বর্তমানের যুলুমের শাসনের পরবর্তী নবুওয়্যতের আদলে খিলাফত, যেমনটি ওয়াদা করেছেন আল্লাহ্
সুবহানাহু ওয়া তা’আলাঃ
وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ
فِي الْأَرْضِ ﴿٥٥﴾
“তোমাদের মধ্যে
যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ্ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন, তাদেরকে অবশ্যই
পৃথিবীতে শাসন-কর্তৃত্ব দান করবেন...” [সূরা আন-নূরঃ ৫৫]
যেমনটি সু-সংবাদ দিয়েছেন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)
“...তারপর আসবে যুলুমের শাসন এবং তা বিদ্যমান
থাকবে যতক্ষন আল্লাহ্ চান, অতঃপর আল্লাহ্ যখন চান তা তুলে নিবেন। তারপর আসবে নবুয়্যতের
আদলে খিলাফত।” [আহমাদ]
এই হচ্ছে আপনাদের প্রতি আমাদের চূড়ান্ত আহ্বানের
পূর্ববর্তী আহ্বান, কারণ আমরা আপনাদের কল্যাণ কামনা করি। সুতরাং, দ্রুত সাড়া দিন হে
মুসলিমগণ, দ্রুত সাড়া দিন হে ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তিবর্গ! ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজে
অংশগ্রহণ ও নুসরাহ্ প্রদান করুন। নীরব দর্শক না হয়ে হিযবুত তাহরীর-এর সাথে খিলাফত
প্রতিষ্ঠার কাজে অংশগ্রহণ করুন। কারণ, আজকে অংশগ্রহণ করলে যে মর্যাদা ও পুরষ্কার
পাবেন ভবিষ্যতে তা পাবেন না, যদিও উভয়টিতেই মর্যাদা রয়েছে।
وَمَا
لَكُمْ أَلَّا تُنفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلِلَّهِ مِيرَاثُ السَّمَاوَاتِ
وَالْأَرْضِ ۚ لَا يَسْتَوِي مِنكُم مَّنْ
أَنفَقَ مِن قَبْلِ الْفَتْحِ وَقَاتَلَ ۚ
أُولَـٰئِكَ أَعْظَمُ دَرَجَةً
مِّنَ الَّذِينَ أَنفَقُوا مِن بَعْدُ وَقَاتَلُوا
ۚ
وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ
الْحُسْنَىٰ ۚ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ
خَبِيرٌ ﴿١٠﴾
“তোমাদের মধ্যে
যারা মক্কা বিজয়ের পূর্বে আল্লাহ’র রাস্তায় ব্যয় করেছে ও জিহাদ করেছে, তারা
(অন্যদের) সমান নয়। এরূপ লোকদের মর্যাদা যারা পরে ব্যয় করেছে ও জিহাদ করেছে তাদের
অপেক্ষায় অনেক বেশী। তবে আল্লাহ্ উভয়কে কল্যাণের ওয়াদা দিয়েছেন। তোমরা যা কর, আল্লাহ্
সে সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।” [সূরা আল-হাদীদঃ ১০]
এই হচ্ছে আপনাদের প্রতি আমাদের চূড়ান্ত
আহ্বানের পূর্ববর্তী আহ্বান, সুতরাং সর্বশক্তিমান, মহান আল্লাহ্ ব্যতীত আর
কাউকে ভয় করবেন না। বলবেন না যে, “যদি আমরা তোমাদের সাহায্য করি তবে আমেরিকা ও
পশ্চিমারা আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবে”, কারণ আল্লাহ্’র রাস্তায় সহায়তা ও
সমর্থনকারী মু’মিনের সামনে শত্রুর পা কেঁপে উঠবে এবং তাদের শক্তি-সামর্থ্য ধ্বসে
পড়বে। তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) বলেনঃ
وَكَانَ حَقًّا
عَلَيْنَا نَصْرُ الْمُؤْمِنِينَ ﴿٤٧﴾
“এবং মু’মিনদের
সাহায্য করা আমার দায়িত্ব।” [সূরা আর-রূমঃ ৪৭]
এই হচ্ছে আপনাদের প্রতি আমাদের চূড়ান্ত
আহ্বানের পূর্ববর্তী আহ্বান, আমরা আপনাদেরকে স্মরণ করাতে চাই আপনাদের প্রকৃত শক্তি-সামর্থ্য
ও শত্রুদের দূর্বলতা সম্পর্কে। আপনারা হচ্ছেন মুসলিম, যারা আল্লাহকে বিশ্ব জাহানের
রব হিসেবে, ইসলামকে নিজেদের দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মদ (সাঃ)-কে নিজেদের নবী
হিসেবে বিশ্বাস করেন। পরাক্রমশালী রব-এর কারণেই আপনারা শক্তিশালী
لَا قُوَّةَ
إِلَّا بِاللَّهِ ﴿٣٩﴾
“আল্লাহ্ প্রদত্ত
শক্তি ব্যতীত আর কোনো শক্তি নাই” [সূরা আল-কাহ্ফঃ ৩৯]
এবং আপনাদের দ্বীন-এর কারণে আপনারা সম্মানিত
وَلِلَّهِ
الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ ﴿٨﴾
“সমস্ত সম্মানতো
শুধু আল্লাহ্, তাঁর রাসূল এবং মু’মিনদের জন্যই।” [সূরা মুনাফিকুনঃ ৮]
...এই হচ্ছে আপনাদের প্রতি আমাদের চূড়ান্ত
আহ্বানের পূর্ববর্তী আহ্বান, আমরা পূর্বের মতো এবারও জোর দিয়ে বলছি যে আল্লাহ্র ইচ্ছায় আপনারা আপনাদের শত্রুদের পরাস্ত করতে সক্ষম। কাফির সাম্রাজ্যবাদী
রাষ্ট্রসমূহ বাহ্যিক দিক থেকে শক্তিশালী দেখালেও বাস্তবে দূর্বল। তারা সমরাস্ত্রের
দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও তাদের মধ্যে বীরোচিত পুরুষের অভাব। কম অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত
কিন্তু বীরোচিতভাবে লড়াইয়ে পারদর্শী ঈমানদারদের একটি বাহিনীর সামনে ভারী অস্ত্রে
সজ্জিত কাপুরুষ বাহিনী নিতান্তই দূর্বল। এটাই কাফিরদের বিরুদ্ধে খিলাফতের সেনাবাহিনীর
লড়াইয়ের প্রকৃত চিত্র। সুতরাং, যুদ্ধক্ষেত্রে মুসলিমদের বিরুদ্ধে সমরাস্ত্রের দিক
থেকে এগিয়ে থাকার কোন মূল্য নাই, কারণ মুসলিমগণ একটি সত্য ও প্রাণসঞ্চারকারী
আক্বীদা ধারণ করে, যা তাদেরকে এমনভাবে যুদ্ধের সক্ষমতা প্রদান করে যার সাথে
মার্কিন নেতৃত্বাধীন যালিমদের তুলনা চলে না। তাছাড়া, অচীরেই তারা এই সত্যকে স্বচক্ষে
প্রত্যক্ষ করবে, যখন আল্লাহর ইচ্ছায় খিলাফতের সূর্য্য উদয় হবে এবং তা একের পর এক
বিজয়ের দিকে ধাবিত হবে, সমস্ত ভূ-খন্ড হতে যালিমদের বিতাড়িত করবে, যদি তাদের
পালিয়ে যাওয়ার জন্য কোন স্থান শূণ্য থাকে...
وَلَتَعْلَمُنَّ نَبَأَهُ بَعْدَ حِينٍ ﴿٨٨﴾
“তোমরা কিছুকাল পরে
এর সংবাদ অবশ্যই জানতে পারবে।” [সূরা ছো’য়াদঃ ৮৮]
এই হচ্ছে আপনাদের প্রতি আমাদের চূড়ান্ত
আহ্বানের পূর্ববর্তী আহ্বান, আমরা আপনাদের সমর্থন ও সহায়তা চাচ্ছি, সুতরাং,
আমাদের সমর্থনে যারা অগ্রবর্তী তাদের সাথে শামীল হন। আমরা আপনাদের দিকে আমাদের
হাতকে প্রসারিত করলাম, একে আঁকড়ে ধরুন এবং সেইসব প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের সাথে
যোগ দিন যারা ইতিমধ্যে আমাদের সাথে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছেন, একটি কাফেলা প্রায়
যাত্রা শুরুর পথে, সুতরাং সেই সফরে যোগ দিন।
وَيَقُولُونَ مَتَىٰ
هُوَ
ۖ
قُلْ عَسَىٰ أَن يَكُونَ قَرِيبًا ﴿٥١﴾
“অতঃপর তারা বলবেঃ এটা কবে হবে? বলুনঃ হবে, সম্ভবতঃ
শীঘ্রই।” [সূরা আল-ইসরাঃ ৫১]
আমরা আল্লাহ্র
সহায়তা ও প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে সন্তুষ্টচিত্ত।
وَيَوْمَئِذٍ
يَفْرَحُ الْمُؤْمِنُونَ ﴿٤﴾ بِنَصْرِ اللَّهِ ۚ
يَنصُرُ مَن يَشَاءُ
ۖ
وَهُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ ﴿٥﴾
“সেদিন মু’মিনগণ
আনন্দিত হবে, আল্লাহ্’র সাহায্যে। তিনি যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন এবং তিনি
পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।” [সূরা আর-রুমঃ ৪-৫]
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির সাথে আহ্বানটির কপি এবং
হিযবুত তাহরীর-এর আমীর বিশিষ্ট ফকীহ্ শেখ আতা’ ইবনে খলিল আবু আর-রাশতা-এর
বক্তব্যের অডিও কপি সংযুক্ত করা হলো।
হিযবুত তাহরীর-এর
মিডিয়া কার্যালয়, উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ
Mobile: +8801798367640 Skype: htmedia.bd